বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও নাট্যজগতে বহু বছর ধরে মা, খালা কিংবা অভিভাবকসুলভ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন ডলি জহুর। অথচ নিজের জীবনের কঠিন সময়গুলোতে তিনি পাননি সেই সহানুভূতির ছায়া, যেটা তিনি পর্দায় বারবার অন্যদের দিয়েছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ডলি জহুর অকপটে জানান, তিনি যখন ২০১১ সালে সিনেমা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন, তখন তার ৩৪ লাখ টাকা পারিশ্রমিক বকেয়া ছিল। বহু নির্মাতা ও প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করেও সেই টাকা তিনি পাননি। বরং টাকা আদায়ের জন্য যে ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেই মানুষটিই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
অভিনয়ের জীবনের এই আড়ালের গল্প আরও তীব্র হয়ে ওঠে যখন তিনি বলেন, স্বামী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় তিনি ছিলেন চরম আর্থিক সংকটে। অথচ যারা একসময় খুব কাছে ছিলেন, তারা কেউ তার পাশে দাঁড়াননি।
এমন এক শিল্পী, যিনি দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যিনি পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা—তার জীবনের এমন অভিমানী উচ্চারণ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, একজন শিল্পীকে শুধু অভিনয়ের গুণেই নয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সম্মান জানানো প্রয়োজন।
ডলি জহুরের কথায় ধরা পড়ে এক দীর্ঘ নীরবতার চিৎকার। যে শিল্পী তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় চলচ্চিত্রের পেছনে দিয়ে গেছেন, আজ অবহেলা ও প্রাপ্য সম্মান না পাওয়ার যন্ত্রণায় কাতর।
এই অভিজ্ঞতা কেবল ডলি জহুরের একার নয়—এটি আমাদের বিনোদনজগতের প্রবীণ, নিষ্ঠাবান, নিঃশব্দ সেনানীদের প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হওয়ার আরেকটি প্রমাণ।
একজন ডলি জহুর যখন বলেন, “সম্মান বলে কিছু নেই,” তখন তা কেবল একটি ব্যক্তিগত আক্ষেপ নয়—বরং এটি আমাদের পুরো শিল্পব্যবস্থার জন্য এক অপ্রিয় আয়না।।