ব্র্যান্ড প্রমোটর: সোশ্যাল মিডিয়ায় তরুণদের ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত
আতিকুর রহমান
নিউজ প্রকাশের তারিখ : May 2, 2025 ইং
বিনোদন ডেস্ক: বাজারে পণ্যের প্রতিযোগিতা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে প্রচারণার কৌশলেরও পরিবর্তন। প্রচলিত বিজ্ঞাপন বা বিলবোর্ডের পাশাপাশি এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ব্র্যান্ড প্রমোটরদের ভূমিকা। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এই পেশার প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। এক সময় ব্র্যান্ড প্রমোশন মানেই ছিল মাঠ পর্যায়ে পণ্যের প্রচার, সুপারশপে দাঁড়িয়ে গ্রাহকের হাতে ফ্লায়ার দেওয়া, কিংবা কোনো মেলায় দাঁড়িয়ে মানুষকে বোঝানো—আজ সেই ছবি বদলে গেছে। এখন স্মার্টফোনই হয়ে উঠেছে মূল হাতিয়ার। সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক ব্র্যান্ড প্রমোশন তরুণদের কাছে নতুন এক সম্ভাবনার নাম। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক কিংবা ইউটিউবে নিজস্ব ফলোয়ার বেস ব্যবহার করে তারা কোনো পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানান দিচ্ছে। কেউ রিভিউ দিচ্ছে, কেউ লাইভে এসে পণ্যের কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করছে, কেউ বা ভিডিও তৈরি করে সরাসরি লিংক শেয়ার করছে—সব মিলিয়ে একটি নতুন মার্কেটিং দুনিয়ার সূচনা ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের সময় ও মনোযোগ যেখানে সবচেয়ে বেশি, সেখানে সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারাটাই ব্র্যান্ডগুলোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হয়ে উঠেছে। এর ফলে মাইক্রো ও ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সারদের চাহিদা বেড়েছে। যাদের ফলোয়ার কম, কিন্তু এনগেজমেন্ট বেশি—তাদের দিয়েই চলছে এখনকার প্রচারযুদ্ধ।
তরুণদের কাছে এই পেশা আকর্ষণীয় হওয়ার পেছনে রয়েছে নমনীয় সময়, আয় করার সুযোগ, পরিচিতি বাড়ানো এবং ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা। যারা ক্যাম্পাসে পড়ছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি ইনকাম করতে চান বা ভবিষ্যতে মিডিয়া ও মার্কেটিং খাতে কাজ করতে চান, তারা সহজেই এই পথে এগিয়ে যেতে পারছেন। শুধু শহরেই নয়, এখন জেলা শহর এমনকি গ্রাম পর্যায়েও স্থানীয় ব্র্যান্ড ও ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা সোশ্যাল মিডিয়া প্রমোটর খুঁজছেন।
অনেক ব্র্যান্ড সরাসরি কোনো এজেন্সির মাধ্যমে প্রমোটর নিয়োগ করে, আবার অনেকেই কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করে। বেতনও নির্ভর করছে কনটেন্টের মান, ফলোয়ারের সংখ্যা ও এনগেজমেন্টের উপর। কেউ কেউ প্রতিটি ভিডিও বা পোস্টের জন্য ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন, আবার অনেক সময় পণ্য বা গিফট প্যাকেজও দেওয়া হয়।
এই পেশায় কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন: নিয়মিত কনটেন্ট দিতে হয়, দর্শকের প্রত্যাশা বজায় রাখতে হয়, নেতিবাচক মন্তব্য সামলাতে হয় এবং ব্যক্তিগত সময় ও প্রাইভেসি অনেক সময় হারিয়ে যায়। তারপরও তরুণরা এতে ঝুঁকছে কারণ এটি শুধু আয় নয়, বরং পরিচিতি ও পেশাগত দক্ষতাও বাড়ায়।
দেশের মার্কেটিং পেশাজীবীরা মনে করছেন, আগামী ৫ বছরে এই খাত আরও বড় পরিসরে বিস্তৃত হবে এবং ব্র্যান্ড প্রমোটর পেশা হবে তরুণদের জন্য অন্যতম মূলধারার ক্যারিয়ার অপশন। ফলে সোশ্যাল মিডিয়া এখন আর শুধু বিনোদনের জায়গা নয়, এটি হয়ে উঠেছে ক্যারিয়ার গড়ার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
আপনার মতামত লিখুন :